1. info.shironamnews@gmail.com : NEWS TV : NEWS TV
  2. info@www.shironamnews.live : Shironam News :
শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ১১:০৫ পূর্বাহ্ন

কুড়িগ্রামে টাকার বিনিময়ে মিলছে প্রতিবন্ধী ভাতা

শিরোনাম ডেস্ক
  • প্রকাশিত: বুধবার, ১ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৭০ বার পড়া হয়েছে

শারীরিকভাবে সুস্থ হলেও কুড়িগ্রামে টাকার বিনিময়ে মিলছে প্রতিবন্ধী ভাতা। অনলাইন আবেদন ছাড়াই ভিন্ন জেলার মানুষও নিতে পারছে এমন সুবিধা। ঘুষের বিনিময়ে একটি চক্র প্রান্তিক মানুষের কাছ থেকে লুফে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। অথচ, এসব বিষয়ে অভিযোগ দিয়েও তেমন কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

জামালপুর দেওয়ানগঞ্জের মাস্টার পাড়া এলাকার বাসিন্দা মহিরন খাতুন। ঘরবাড়ি-জোত জমিসহ পালের গরু-ছাগল আছে। শারীরিক বা মানসিক প্রতিবন্ধকতা নেই। কিন্তু সরকারি প্রতিবন্ধী তালিকায় নাম আছে। এরইমধ্যে প্রথম কিস্তি হিসেবে পেয়েছেন ১০ হাজার ২৭২ টাকা। অন্যদিকে একই গ্রামেই বাস করেন সুবর্ণা খাতুন। বাড়িতে সেলাই মেশিনের কাজ করে চল তার সংসার। শারীরিকভাবে সুস্থ-সবল হলেও তিনিও পেয়েছেন প্রতিবন্ধী ভাতা।

মহিরন খাতুন বলেন, আমি প্রতিবন্ধী ভাতা পেয়েছি ১০ হাজার টাকা। এর বিনিময়ে ৫ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে।

সুবর্ণা খাতুন বলেন, একবার পাইছি ১০ হাজার ২৭২ টাকা। আবার পাইছি ২৫০০ টাকা। আমরা যখন জিজ্ঞেস করছিলাম তখন বলছিল সমাজসেবা অধিদপ্তরের টাকা। পরে জানতে পারছি এটা প্রতিবন্ধি ভাতার টাকা।

দেওয়ানগঞ্জের প্রায় ৪ শতাধিক সুস্থ মানুষ এই প্রতিবন্ধী ভাতার সুযোগ পাচ্ছেন কুড়িগ্রাম সমাজসেবা কার্যালয়ের অধীনে। এমনকি জেলার রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলাতেও ঘুষ নিয়ে শত-শত সুস্থ নারী পুরুষকে প্রতিবন্ধী তালিকায় ঢুকিয়েছে একটি মহল।

এক নারী বলেন, আমার স্বামী সুস্থ সবল। গাড়ি চালিয়ে পরিবারের ভরনপোষণ করেন, তবু প্রতিবন্ধী তালিকায় নাম লিখে দেয়ার নাম করে ৫ হাজার টাকা নিয়েছে। এই সিন্ডিকেট চক্রের প্রধান রৌমারি ও রাজিবপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মিনহাজ উদ্দিন। আর সঙ্গে জড়িত ফিল্ড সুপারভাইজার আব্দুল্লাহ হেল কাফী।

নাম পাইয়ে দিতে ঘুষ গ্রহন ও টাকা তোলার দায়িত্ব বন্টন:

রৌমারী উপজেলা সমাজসেবা অফিসের তথ্য অনুযায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বয়স্ক,প্রতিবন্ধী, বিধবার নামের জন্য রৌমারী উপজেলার সেবাগ্রহীতা প্রায় ২৫ হাজার মানুষ অনলাইনে আবেদন করে। তার মধ্যে নাম হয় প্রায় ১০হাজার মানুষের। সমাজসেবা কর্মকর্তা স্থানীয় হওয়ায় এই নাম তালিকা ভূক্ত করতেই বেছে নিয়েছেন অসাধূ উপায়। সমাজসেবা অফিসের কোনপদে না থেকেই অফিসের গোপন পাসওয়ার্ড ব্যাবহার করে অফিসের কাজ করে সমাজসেবা কর্মকর্তার আপন ভাতিজা সোহেল রানা। সুধু তাইনয় সমাজসেবা কর্মকর্তা প্রতিটি ইউনিয়নে ওয়ার্ডে এবং গ্রামে গ্রামে তৈরী করেছে টাকা তোলার দালাল। তারা সমাজ সেবা কর্মকর্তার ছত্রছায়া পেয়ে আরো ব্যাপরোয়া হয়ে উঠেছে। তিনি বন্দবেড় ইউনিয়নে টাকা তোলার দায়িত্ব দিয়েছেন, বাইটকামারী গ্রামের মোছা. ওমেলা বেগম, মোছা. শাবনুর বেগম, খনজনমারা গ্রামের মোছা. ছকিনা বেগম, ঝুনকিরচর গ্রামের মো. দুলাল হোসেন, মো. হোসেন আলী (পল্টি), বাগুয়ারচর গ্রামের মোছা. কোহিনুর বেগম, বাইশপাড়া গ্রামের মো. নাসিম,শৌলমারী ইউনিয়নে ঝুনকিরচর গ্রামের মোছা. কোহিনুর বেগম, বেহুলারচর গ্রামের মো. আনোয়ার হোসেন, চেংটাপাড়া গ্রামের মো. মোতিউর রহমান, রৌমারী সদর ইউনিয়নের ফুলবাড়ী গ্রামের মো. আব্দুল হামিদ, চরশৌলমারী ইউনিয়নে কলেজপাড়া গ্রামের চহিদার মো. আমির হোসেন, বাজারপাড়া গ্রামের মো. আশাদুল ইসলাম, রাজিপুর উপজেলার টাকা তোলেন রাজিবপুর সদর ইউনিয়নের শাহিনা, ফাতেমা, আব্দুল আলীম,মজিবর রহমান মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের মনোয়ার হোসেনসহ আরো অনেকেই। এ দালালেরা নিজ ইউনিয়নের নাম নেওয়ার পাশাপাশি অন্য ইউনিয়নে নতুন করে লোক তৈরী করে নামের টাকা উত্তোলনে কাজ করে চলছে। পরে উত্তোলন কৃত টাকা জমা হয় উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মেনহাজ উদ্দিনের কাছে। টাকা নেওয়ার অফিস হিসাবে ব্যবহার করছেন সমাজসেবা কর্মকর্তার নিজ বাড়ী।

এখানেই থেমে নেই এই দালাল চক্রটি এখন রৌমারী উপজেলায় বয়স্ক,প্রতিবন্ধী ও বিধবা নামে ঘুস বাণিজ্য ওপেন সিক্রেট। এ দালালরা অতিতে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্যদের কাছে ধরন্যাধরে কয়েকটা নামনিয়ে এলাকায় বিক্রিয় করত। সেই হিসাবে তারা স্থানীয়দের কাছে দালাল নামে ক্ষেতো। সমাজসেবা অফিসে কোন নাম এলেই এ চক্রটি বিভিন্ন এলাকায় ঢুকে নাম পাইয়ে দেওয়ার কথাবলে প্রতি নামে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে। এমনকি নামের টাকা দিতে না পারলে বিকাশ একাউন্ড করা সীম নিচ্ছে দালাল চক্রটি এবং শর্ত থাকে সীমের প্রথম টাকা রেখে সীম ফেরত দেওয়া হবে। সেই শর্তে সুবিধাভোগীদের কাছথেকে নেওয়া হয় সীম।

এদিকে সমাজ সেবা অফিসের কর্মচারিরা বলছে কর্মকর্তার এক ঘেয়ামী পোনার কারণে ক্ষতি হচ্ছে অফিসের কার্যক্রম। এতে সমাজ সেবা অফিসে সেবা নিতে এসে হয়রানীর শিকার হচ্ছে সাধারণ সেবা প্রার্থীরা। অনেকেই আবার দীর্ঘ সময় অপেক্ষাকরে কাঙ্খিত সেবা না পেয়ে মোন খারাপ করে চলে যাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অফিসে কর্মরত একজন বলেন , এ কর্মকর্তা রৌমারীতে সমাজসেবা অফিসে অফিসার হিসাবে গত ৩০-১১-২০২২ যোগদান করেন। তিনি রৌমারী উপজেলার স্থানীয় হওয়ায় এ অফিসে যোগদান করার পরথেকেই তার ভাতিজাকে নিয়ে সে অফিস করেন। তার ভাতিজা অফিসের কোন স্টাফ না হয়ে অফিসের গোপন পাসওয়ার্ড ব্যাবহার করে কাজকরে। সুধু তাই নয় যে কাজগুলা আমাদের করার কথা সে কাজগুলা তার ভাতিজ কে দিয়ে করে নেয়। এই অফিসারের কাছে আমরা সঠিক মূলয়ন পাচ্ছি না।

সমাজসেবা অফিসের কর্মচারী না হয়ে অফিসের গোপন পাসওয়ার্ড ব্যবহারকরে কাজ করার বিষয়ে সোহেল রানার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি মাস্টারুলে এ অফিসে কাজ করি এ সমাজ সেবা অফিসের কর্মকর্তার আমি আপন ভাতিজা হই তাই আমার চাচা আমাকে দিয়ে তার অফিসের সব কাজ করিয়ে নেয়। আমার চাচা আমাকে যা যা বলে আমি তাই করি তার বাহিরে কিছুই করিনা। তিনি আরো বলেন, কয়েকদিন আগে হঠাৎ আমার চাচা আমাকে অফিসে যেতে নিষেধ করেছে তাই আমি এখন আর অফিসে যাই না।

অন্যদিকে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মিনহাজ উদ্দীন বিষয়টি অস্বিকার করে বলেন, এ বিষয়ে আমাদের দু’একটা প্রমাণ দেখান।

সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক হুমায়ুন কবির বলেন, তিনটি অভিযোগপত্র পেয়েছি। তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। অচিরেই হয়তো তারা যাবে। ওরা গিয়ে তদন্ত করবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
© www.shironamnews.live
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট