২০২৪ সালের আগষ্ট মাসের ৩ তারিখ। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ভেওয়ামারা এলাকায় শ্বশুরবাড়ি থেকে তুহিন রানা নামের এক যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ।
তুহিনকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনেরা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে ঘরের বারান্দার সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলিয়ে রেখেছে এমন অভিযোগ উল্লেখ করে নিহত তুহিনের বাবা ছামিদুল ইসলাম বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামী করে আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের পরে আদালত থেকে মামলাটি তদন্তভার দেওয়া হয় সিরাজগঞ্জ সদর থানাকে। প্রথমে থানা থেকে উপ-পরিদর্শক ইয়ামিন সরকারকে তদন্তের জন্য দেওয়া হলেও মামলাটির চূড়ান্ত রিপোর্ট সম্পূর্ণ করার আগেই তার বদলি হয়ে যায়। পরবর্তীতে উপ-পরিদর্শক মো: সোহাগ এর উপর দেওয়া হয় মামলার তদন্তভার।
হত্যা মামলার মোড় ঘুরিয়ে দিতে আসামী পক্ষের হয়ে কাজ করছে পুলিশ এমন অভিযোগ তুহিনের বাবা-মাসহ স্বজনদের। তারা বলছেন, সাদা কাগজ নিয়ে তাদের বাড়িতে গিয়ে জোড়পূর্বক সাক্ষর নিতে চায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সোহাগ ও তার সাথে থাকা উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আহসান। কোনোরকম কথা বলার সুযোগ না দিয়ে বারবার সাক্ষর দিতে বলেন সাদা কাগজে।
মামলায় উল্লেখিত সাক্ষীদের অভিযোগ, তদন্তকারী কর্মকর্তা মো: সোহাগ তাদের কোনরকম যোগাযোগ না করেই নিজের মনগড়া কথা লিখে চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। সাক্ষীর বিবৃতির জায়গায় সাক্ষীদের বক্তব্য লেখা হলেও প্রকৃত সাক্ষীদের থেকে কোনো বক্তব্য নেয়নি পুলিশ।
এ বিষয়ে উপ-পরিদর্শক মো: সোহাগের বক্তব্য নিতে থানায় গেলে তিনি ক্যামেরার সামনে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির জানান, যদি মনে হয় চূড়ান্ত রিপোর্ট সঠিক হয়নি তাহলে কোর্টে নারাজী দেওয়া যাবে। নারাজী দিলে পুনরায় মামলার তদন্ত হবে।
সিরাজগঞ্জ সদর সার্কেল এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজরান রউফ মুঠোফোনে জানান, কয়েকদিন হলো জয়েন করেছি তাই বিষয়টি সঠিক জানা নেই। তবে পুলিশের কোনো গাফিলতি আছে কিনা তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি।
ছেলে হত্যার বিচার হবে এমন আশায় তুহিনের ছবি বুকি জড়িয়ে দিনের পর দিন চোখের পানি ফেলছেন গর্ভধারিণী মা। তুহিন হত্যার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ একইসাথে সাদা কাগজে সাক্ষর নিতে যাওয়া তদন্তকারী কর্মকর্তার সুষ্ঠ বিচারের দাবি নিহতের পরিবারের।